বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন
সৈয়দ মেহেদী হাসান ।। তরুন বয়সে এতটা জনপ্রিয় নেতা দক্ষিণবঙ্গে কেউ হতে পেরেছেন কিনা তা নিয়ে সকলেই সন্দিহান। রাজনীতি, জনপ্রতিনিধিত্ব আর জনসেবায় তাক লাগিয়েছে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জনবহুল বরিশাল নগরের পাঁচ লাখ মানুষেরর। যেখানে হাজির হন, সেখানেই জড়ো হয় হাজারো মানুষ। নগরবাসীর পালস তার অন্তরে হৃদয়ঙ্গম করা।
আর এই জনপ্রিয়তাই যেন করোনা বিদায় না হওয়া পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থাকতে বাধ্য করেছে। নিজে স্বীকার করেছেন, তার বাইরে চলাফেরার বাধ্যবাধকতার কারন মানুষ জমায়েত না করা। জহনপ্রিয় এই জনপ্রতিনিধি সরকারি নির্দেশনা শতভাগ পালনে নিজেকে রেখেছেন আবদ্ধ। এতে করে কমিউিনিটি ট্রান্সমিশন হওয়ার কোন সম্ভাবনাও থাকলো না। সচেতনরা মনে করেন, এমন সিদ্ধান্ত অত্যান্ত উকারী এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুবই কার্যকর।
‘সমস্যা হয় নাই। আমাগো লাগবে পেটের ক্ষুধা মারা। তারে দেখলেতো পেট ভরবে না। তার চাইতে তিনি যে ত্রাণ ঘরে গরে পৌঁছাইয়া দিছে হেউডা খুব ভালো হইছে।’ বলছিলেন ২৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হারুন। পেশায় রিকশা চালক এই নিম্নবিত্ত মনে করেন তিনি কখনো গলাবাজি করেন নাই। মানসেরে কথা দিয়া কথা রাখেন নাই এমন কথা হুনি নাই। তিনি যা পরবেন, হেইডাই বলেন। শেখ সাহেবের বংশের মানুষ; হইছেনও শেখ সাহেবের মতন।
কথা হচ্ছিল বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের তুমুল জনপ্রিয় মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ প্রসঙ্গে। নিন্দুকেরা পিছনে মন্তব্য করলেও তার জাদুকরী কর্মকান্ডে সবাই এখন চুপ। অনেকেই বলেছিলেন মেয়র মহোদয়রে দেখা যাইতাছে না। সত্য কথা। কিন্তু লাখ মানুষেরে ঘরে খাবার পৌঁ দিয়েছেন সেই অদেখো থেকেই। এমন মন্তব্য সাগরদী ব্রাঞ্চ ২৪ নং ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা সোহাগের।
তিনি আরও বলেন, শহরের একটা মানুষ বলতে পারবে না যে মেয়রের ত্রাণ পান নাই। যারা গরিব, তাদের ঘরেই পৌঁছে গেছে মেয়রের সালাম। ইসলাম পাড়ার আরেক বাসিন্দা ফয়জুন্নাহার বেলি মনে করেন, ইনসাফ নিয়া কাজ করেন সাদিক আব্দুল্লাহ। তার কাছে নিজ দল আর পরের দল নাই। অপরাধ যে করেন তারেই সে বিচার বরেন। সর্বশেষ বরিশাল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজনের বহিস্কারাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আর কোন নেতা হইলে সুজনরে পদোন্নতি দিত। কিন্তু মেয়রে দেখলেন সুজন আসলে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ষড়যন্ত্র করতেছে। সেজন্য তারে দলেই রাখলেন না। এটাকেই বলে ইনসাফ।
জানা গেছে, নিজেকে আবদ্ধ রাখলেও মানুষের সহায়তায় উজার করে দিয়েছেন সমস্ত কিছু। ইতিমধ্যে নিজস্ব উদ্যোগে গঠন করেছেন ত্রাণ তহবিল। আর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সম্মানি-ভাতার প্রায় সাড়ে ৩৫ লাখ টাকা দান করেছেন করোনা মোকাবেলায়। ইতিমধ্যে অর্ধলাখের মানুষের খাদ্যের সংস্থান করেছেন। নগদ অর্থে কিনে দিয়েছেন প্রয়োজনীয় দ্রব্য। অদ্ভুদ সত্য হলো, নিজে ঘরে থাকলেও নগরীর প্রত্যেক নাগরিকের খবর তিনি রাখছেন।
ইতিমধ্যে নগরের ৩০ টি ওয়াডের্র ৫৬ হাজার কর্মহীন, অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা পৌছে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশেনর প্রশাসনিক মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি জানান, মেয়র সেরিনয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র নির্দেশে গত ৩০ এপ্রিল থেকে নগরের কলোনিগুলোতে কর্মহীন, অসহায় ও দুস্থ পরিবারের ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌছে দেয়ার কার্যক্রম শুরু করা হয়।
প্রথমে দিনের বেলা দেয়া হলেও এখন ত্রাণ রাতের বেলা অসহায় প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে দিচ্ছে আমাদের কর্মীরা। পর্যায়ক্রমে ত্রিশটি ওয়ার্ডে ৫৬ হাজার কর্মহীন, অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা পৌছে দেয়া হয়েছে। বর্তমান সংকট নিরসন না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলমান রাখার কথা জানিয়েছেন মেয়র।
বিসিসি জানিয়েছে, নগরীতে ৩২০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হচ্ছে। সাথে ৭ লাখ ৭০ হাজার টাকার নিত্য পন্য বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও মেয়রের উদ্যোগে সিটি করপোরেশনের ত্রাণ তহবিল খোলা হয়েছে। যেখানে মেয়র তার বেতন ও ভাতার ৩৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা দিয়ে দিয়েছেন।
এছাড়া বুধবার পর্যন্ত এ তহবিলে ১ কোটি ৫ লাখ ৪ হাজার টাকা জমা পরেছে। করোনা যুদ্ধে মেয়রের এমন বুদ্ধিদীপ্ত অবস্থান এবং সর্বাত্মক সহযোগীতাপূর্ণ কার্যক্রমে প্রশংসায় ভাসছেন নগর পিতা।
ওদিকে করোনার পাশাপাশি যেন বর্ষায় ডেঙ্গুর প্রকোপ না হতে পারে সেজন্য সরাসরি তত্ত্বাবধায়নে ড্রেনেজ ব্যবস্থা পরিস্কার, পয়ঃনিস্কাশন, সড়ক জীবানুমুক্ত রাখতে স্প্রে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। এমনকি করোনার ক্রান্তিকালে নগর ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানেও কোন প্রভাব পড়েনি।
সিটি কর্পোরেশনের কর নির্ধারক বেলায়েত বাবলু জানান, মেয়র স্যার অত্যান্ত দক্ষতার সাথে করোনা মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছেন। নিরলসভাবে তিনি সবার খোঁজ-খবর রাখছেন। যার যা প্রয়োজন তা পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সবকিছু যখন লকডাউন হয়ে যাচ্ছিল নগর ভবনের অনেকেই টেনশন করছিলেন আসলে সাবেক মেয়রের মত নগর ভবন অর্থ সংকটে পরে কিনা। কিন্ত সেই চিন্তা মিথ্যা প্রমান করে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ অত্যান্ত সক্ষমতার সাথে সব কিছু সামলে নিয়েছেন। তিনি সময়মত বেতন-ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন। তাছাড়া দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কি দরকার তা পূরণ করেছেন।
Leave a Reply